ঢাকা,সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়ায় চিংড়িঘের কর্মচারী বেলাল খুনের কিলিং মিশনে ছিলো সাতজন

এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া ::  চকরিয়া উপজেলার চিংড়িজোনে অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তদের হামলায় নিহত ঘের কর্মচারী বেলাল উদ্দিন খুনের মামলাটি অবশেষে নতুন মোড় নিয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চকরিয়া থানার এসআই আবদুল বাতের গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে মামলার অন্যতম আসামি জামাল হোসেনকে গ্রেফতারের মধ্যদিয়ে হত্যাকা-ের রহস্য উম্মোচনে সফল হয়েছেন। গতকাল রোববার গ্রেফতারকৃত আসামি জামাল হোসেন স্বেচ্ছায় চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়ে কিলিং মিশনে ক’জন অংশ নিয়েছিলো এবং কীভাবে বেলালকে মারা হয়েছে তাঁর সবকথা অকপটে স্বীকার করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার আইও এসআই আবদুল বাতেন।

চকরিয়া থানার এসআই আবদুল বাতেন বলেন, ২০১৯ সালের ১৩ মে রাতে ঘের থেকে মাছ ছুরি সংক্রান্ত ঘটনার জেরে চকরিয়া উপজেলার চিরিঙ্গা ইউনিয়নের চরনদ্বীপের একটি চিংড়িঘেরে অস্ত্রধারীদের হামলায় আহত হন বেলাল। পরবর্তীতে ঘটনার পাঁচদিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় চমেক হাসপাতালে মারা যান বেলাল। নিহত ঘের কর্মচারী বেলাল উদ্দিন উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের পূর্ব ডুমখালী গ্রামের জাফর আলমের ছেলে।

হত্যার ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষথেকে চকরিয়া থানায় ১১জনের নাম উল্লেখ্য করে এবং আরো ৩-৪জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি দেখিয়ে একটি মামলা রুজু করা হয়। এরপর অভিযান চালিয়ে ইতোমধ্যে মামলার দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আবদুল বাতেন বলেন, দুইজন গ্রেফতার হলেও হত্যাকা-ের ক্লু উৎঘাটনে আমাকে নানাধরণের বিড়ম্বনার সম্মুখীন হতে হয়। পরবর্তীতে মামলাটি তদন্ত করতে গিয়ে জানতে পারি বেলাল উদ্দিন যে চিংড়িঘেরে চাকুরী করতেন সেখানে সহযোগি হিসেবে কাজ করতো কামাল উদ্দিন নামের এককর্মচারী। মুলত বেলাল মালিকের অগোচরে ঘের থেকে মাছ চুরি করে বিক্রি করতো। ঘটনাটি অপর কর্মচারী কামাল উদ্দিন মালিককে অবহিত করেন। এরই জেরে ঘের মালিক ডেকে এনে কর্মচারী বেলালকে তিরস্কার করেন।

ওই ঘটনার জেরে বেলাল উদ্দিন একদিন অপর কর্মচারী কামাল উদ্দিনকে মারধর করেন। বিষয়টি স্থানীয় ইউপি মেম্বারকে নালিশ দেয়া হলে তিনি কোন ধরণের ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে বাধ্য হয়ে কামাল উদ্দিন ঘটনাটি তাঁর ছোটভাই জামাল হোসেনকে জানায়। এরপর ভাইকে আঘাত করার বদলা নিতে জামাল সহযোগিদের নিয়ে হামলা চালায় ঘেরে। ওইসময় ঘেরের বাসায় ঘুমন্ত কর্মচারী বেলালকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে জামাল হোসেনসহ তাঁর সাথে কিলিং মিশনে অংশ নেয়া দুর্বৃত্তরা। গতকাল আদালতে বেলাল হত্যাকা-ের সময় সাতজন অংশ নিয়েছে বলে স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন গ্রেফতারকৃত জামাল।

এসআই আবদুল বাতেন বলেন, আগেরদিন শনিবার দুপুরে চকরিয়া উপজেলার ফাসিয়াখালী ইউনিয়নের ছড়ারকুল এলাকার একটি ভাড়াবাসা থেকে গ্রেফতার করা হয় জামাল হোসেনকে। তার বাড়ি একই উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের ডুমখালী উত্তরপাড়া। তাঁর বাবার নাম মৃত ফজল করিম। রোববার হত্যাকা-ের বিষয়ে ১৬৪ ধারায় স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি শেষে আদালতের বিচারক তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

পাঠকের মতামত: